সিগারেট-জর্দ্দাখাওয়ার শরয়ী বিধান:
---------------------------------
কোরআন হাদীসের আলোকে সিগারেট জরদা খাওয়া হারাম।
প্রমাণ হচ্ছে:
(১) সিগারেটের গায়ে লেখা থাকে ধুমপান মৃত্যু ঘটায়": আল্লাহর বাণী-
ﻭﻻ ﺗﻠﻘﻮﺍ ﺑﺎﻳﺪﻳﻜﻢ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﺘﻬﻠﻜﺔ
"তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো
না।" [বাকারা-১৯৫]
সবাই জানে কীভাবে সিগারেট
একজন মানুষকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়।
(২) সিগারেট-জর্দ্দা নেশাজাতীয় জিনিস : নবী (সা)
বলেছেন- " প্রত্যেক নেশার বস্তুই মাদক (খামার)
আর প্রত্যেক নেশার জিনিসই হারাম।" [মুসলিম-২০০৩]
(৩) কেউ একসাথে ১০ টি সিগারেট খেলে তার
নেশা হতে বাধ্য : রাসূল (সা) বলেছেন- "যা অধিক
সেবন করলে নেশার সৃষ্টি হয় তা কম সেবন করাও
হারাম।" [তিরমিযি-১৮৬৫, আবু দাঊদ-৩৬৮১]
(৪) সিগারেট-
জর্দ্দাঅপবিত্র জিনিস : আল্লাহ বলেন-
ﻭﻳﺤﻞ ﻟﻬﻢ ﺍﻟﻄﻴﺒﺎﺕ ﻭﻳﺤﺮﻡ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﻟﺨﺒﺎﺋﺚ
তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল ও অপবিত্র বস্তু হারাম করা হয়েছে।" [আরাফ-১৫৭]
(৫) সিগারেট জর্দ্দায়
কোন ফায়দা নেই, এটা অপব্যায় : আল্লাহ বলেন-
ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺒﺬﺭﻳﻦ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﺇﺧﻮﺍﻥ ﺍﻟﺸﻴﺎﻃﻴﻦ
"নিশ্চয়ই অপব্যায়কারী শয়তানের ভাই।" [সূরা ইসরা-২৭]
(৬) সিগারেটের ধোঁয়ায় মানুষ চরম কষ্ট পায় : রাসূল
(সা) বলেন- "যে ব্যক্তি আখিরাতে বিশ্বাস রাখে,
সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না
দেয়।" [বুখারী]
(৭) সিগারেট পুষ্টিকরও নয়, ক্ষুধা
নিবারণ মূলকও নয় : জাহান্নামীদের খাবারের
প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন- "এটা তাদের পুষ্টিও
যোগাবে না ক্ষুধাও নিবারণ করবে না।" [গাশিয়াহ-৭]
আলিমদের মত : সিগারেট-জর্দ্দা খাওয়াকে শাইখ
মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উছায়মীন (রাহ), শাইখ আবদুল্লাহ
বিন বায (রাহ), আল্লামা মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম অসংখ্য
উলামায়ে কেরাম হারাম বলেছেন।
শেষ কথা : রাসূল (সা) বলেছেন- "আমার কিছু উম্মত
মদ পান করবে, কিন্তু নাম দিবে ভিন্ন।" [ইবনে
মাজাহ-৪০২০] কী বুঝলেন ভাই?
[বিঃদ্রঃ সিগারেট-জর্দ্দা
দুটোতেই তামাক পাতা থাকে। এগুলোকে আলাদা
করে দেখার কোন অবকাশ নেই।]
আল্লাহ আমাদেরকে সুস্পষ্ট হারাম ও সন্দেহযুক্ত
হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমীন।
পোস্টটি শেয়ার করে ছওয়াব লাভ করুন।
----------------------
----------------------
সিগারেট কি হারাম?
ধূমপান বর্তমানে প্রচুর সমস্যা ও ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই সাথে ধূমপানের সমস্যাগুলো অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ধূমপান হারাম না হালাল সেটা ব্যাখ্যা করার আগে একটা ব্যাপার বলে নেয়া জরুরি, আল্লাহ পৃথিবীর সকল কিছুকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। ভালো বা হালাল এবং খারাপ বা হারাম। এখানে তৃতীয় কোন প্রকার নেই। আল্লাহ বলেনঃ
• তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ (সূরা আরাফ :১৫৭)
সুতরাং ধূমপান হয় হালাল হবে নতুবা হারাম হবে। অন্য আর যে যা বলে তা গ্রহনযোগ্য হবে না।
এবার আসুন ধূমপান এর ব্যাপারে বর্তমানে বিজ্ঞানী এবং ডাক্তাররা একমত যে স্বাস্থ্যের জন্য ধুপমান মারাত্মক ক্ষতিকর। ফুসফুসের ক্যান্সারসহ আরো মারাত্মক রোগের মূল কারন ধূমপান। ধূমপায়ী মায়েদের সন্তান বিকলাঙ্গ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্কুল কলেজে ধূমপান এর অপকারিতা নিয়ে অনেক রচনা অনেকেই লিখেছেন। আর এটা তো জানাই যে ধূমপান মৃত্যুর একটা বড় কারন। CDC (Center for Disease Control) এর হিসাবে প্রতি বছর বার্ধক্যজনিত কারন, দূর্ঘটনা, HIV তে যত মানুষ মারা যায় তার মোট সংখ্যার চেয়ে শুধুমাত্র ধূমপানে বেশি মানুষ মারা যায়। লেখার শেষে লিঙ্ক দেয়া আছে, আরো বিস্তারিত আছে সেই ব্যাপারে। American Cancer Society এর হিসাবে ২০১৩ সালেই ২২৮১৯০ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে তামাকের কারনে। আর ১৫৯৪৮০ জন মারা গেছেন একই কারনে। সুতরাং ধূমপান যে কতটা ভয়াবহ তা বুঝতে পারার কথা। খুব স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় ধূমপান হচ্ছে বিষপান, আত্মহত্যার একটা দীর্ঘ উপায়। আর আল্লাহ বলেছেন,
• তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। (কোরান নিসা :২৯)।
• তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। (কোরান নিসা :২৯)।
এছাড়াও নবী মুহাম্মদ(সা) বলেছেন,
# এখানে (ইসলামে ) এমন কিছুই নেই যা খারাপ বা খারাপ করতে পারে । (Arabic "laa darar wa laa diraar")
# এখানে (ইসলামে ) এমন কিছুই নেই যা খারাপ বা খারাপ করতে পারে । (Arabic "laa darar wa laa diraar")
তিনি আরো বলেন, “তোমার শরীরের তোমার উপর অধিকার আছে।” একটু আগেই দেখিয়েছি কিভাবে ধূমপান মানুষকে শেষ করে দেয়। ধূমপান করা মানে হচ্ছে শরীরের উপর অত্যাচার করা। সুতরাং ধূমপানের মধ্য দিয়ে আমরা শরীরের অধিকার নষ্ট করছি, বিচারের দিনে এর হিসাব আমাদের দিতে হবে।
আর যেখানে সেখানে ধূমপান যে অধূমপায়ীদের অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেই চলে। সিগারেটের বাজে গন্ধ অনেকের সহ্য হয় না আবার অনেকের অ্যাজমা থাকলে তাদেরও সমস্যা হয়। আর সিগারেটের বাজে গন্ধ ফেরেশতাদেরও সমস্যা করে। আর এই ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন,
• যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব :৫৮)।
• যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব :৫৮)।
আর CDC এর হিসেবে প্রতি বছর গড়ে ৪৯৪০০ অধূমপায়ী মারা যায় ধুমপায়ীদের ধোঁয়ার কারনে আক্রান্ত হয়ে। এই মানুষগুলোকে আসলে হত্যা করে ধুমপায়ীরা বিনা কারনে। আর বিনা কারনে কাউকে হত্যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন-
• যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। (সূরা মায়িদা :৩২)
• যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবাপৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। (সূরা মায়িদা :৩২)
যে জিনিস এতো সমস্যার সৃষ্টি করে তা না বললেও চলে। সুতরাং এই পথে অর্থ ব্যায় অপব্যায় হিসেবেই গন্য হবে। আর এটা তো জানাই যে
• নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা বনী ইসরাইল:২৭)
• নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা বনী ইসরাইল:২৭)
# আর মুহাম্মদ(সা) বলছেন, “শেষ বিচারের দিন একজন মানুষকেও অগ্রসর হতে দেয়া হবে না যতক্ষন না সে হিসাব দেবে সে তার অর্জিত অর্থ কিভাবে খরচ করেছে”।
# হযরত নুমান ইবনে বাশীর (রা) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: হালাল বা বৈধ সুস্পষ্ট এবং হারাম বা অবৈধও স্পষ্ট, আর এ দু’এর মধ্যবর্তী বিষয়গুলো হলো সন্দেহজনক। আর বেশীরভাগ লোকই সেগুলো (সম্পর্কে সঠিক পরিচয়) জানে না। অতএব যে ব্যক্তি ঐ সন্দেহজনক জিনিসিগুলোকে পরিহার করলো সে তার দ্বীন ও মান-সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক জিনিসে জড়িয়ে পড়লো সে হারামের মধ্যে পড়ে গেল। (মুত্তাফিক আলাইহি)
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি বুঝে যাবার কথা সিগারেট হারাম নাকি হালাল।
অনেকেই আছে নিজেদের সুবিধায় বলে যে সিগারেট মাকরুহ কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি হয় হালাল না হয় হারাম। মাঝামাঝি কিছু নাই। হালালের বিভিন্ন শ্রেণীই হচ্ছে মুস্তাহাব, মুবাহ , মাকরূহ । তাই যারা ধূমপান করে তাদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেয়া। কাজটা অনেক কঠিন কিন্তু একেবারেই অসম্ভব না। । আল্লাহ আমাদের সকল হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক ।
অনেকেই আছে নিজেদের সুবিধায় বলে যে সিগারেট মাকরুহ কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি হয় হালাল না হয় হারাম। মাঝামাঝি কিছু নাই। হালালের বিভিন্ন শ্রেণীই হচ্ছে মুস্তাহাব, মুবাহ , মাকরূহ । তাই যারা ধূমপান করে তাদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব ধূমপান ছেড়ে দেয়া। কাজটা অনেক কঠিন কিন্তু একেবারেই অসম্ভব না। । আল্লাহ আমাদের সকল হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুক ।
প্রতিবেদকঃ
খন্দকার সাইদুল আলম